বিজয় পোদ্দার, ফরিদপুর:
“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম.......”। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহবান আর স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রেরণায় তখন রক্তের ধারায় বইছিল মুক্ত হবার, স্বাধীনতা পাবার চেতনা। পরাধীনতার শিঁকল ছিঁড়ে মুক্ত দ্বদেশের মাটিতে জাতি সত্ত্বার স্বাধ আস্বাধনের প্রেরণা তাকে সংগ্রামী করে তোলে। তৎকালিন পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কমান্ডার-কাম-গেরিলা ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভারতের চব্বিশ পরগুনা হাসনাবাদে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ তরুনদের দেশ সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করা ছিল তার অন্যতম কাজ। পরবর্তীতে বৃহত্তর ফরিদপুরের যুদ্ধকালীন সময়ে ভাটিয়াপাড়া, বেতরগঞ্জ, দামো, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী, ওড়াকান্দি, রামদিয়া, ভিতুকান্দিসহ বিভিন্ন স্থানে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। হাজার-হাজার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে করে শত্রু নিধন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্থ সহচর হিসেবে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা অন্যতম ৫নং আসামী হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছিলেন এই বীর সন্তান। ১৯৭১ সালের ১৭ই ডিসেম্বর ফরিদপুর পুলিশ লাইনে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর বিগ্রেডিয়ার রাজেন্দ্র নাথ ও তৎকালীণ সাব সেক্টর কমান্ডার নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুলের কাছে হানাদার বাহিনী আত্মসমার্পন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উজ্জীবিত করা আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলার সংগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও আজকের প্রজন্ম শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়েছেন। শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সাম্প্রতিক ২০১০ সালে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের হামলায় গুরুতর আহত হন। তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়। অকুতোভয় এই সৈনিক এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রজ্ঞাকে শ্রদ্ধা করে পথ চলছেন। গৌতম স্মৃতি পদক, মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। দেশের এই বীর সন্তান ২৭ জানুয়ারী ১৯৩৪ সালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানার কুমারভোগ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলহাজ্ব মরহুম তমিজউদ্দিন আকন্দ, সংসারে ৫ ভাই, ২ বোন। বর্তমানে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট ১নং সড়ক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার রণাঙ্গনের অনেক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। তিনি গোয়ালচামটে নিজ বাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন বাবুল স্মৃতি জাদুঘর ও পাঠাগার নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। স্বপ্ন দেখেন জাতির পিতার সমৃদ্ধ ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশের। আর মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় জাগ্রত নতুন প্রজন্মের।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন