বিজয় পোদ্দার :
ফরিদপুর: এই উদ্যানে, মাঠ, রাজপথে এসো/আদর্শের ধারাতে আবারও জয় বাংলায়......। জয় বাংলা বাঙালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম, সার্বভৌমত্ব জাতিগত ঐক্যের সেতু বন্ধনে আণবিক বোমার মত কাজ করেছে। দীপ্ত প্রদীপের আলো জ্বেলেছে গণমানুষের অন্তরে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শের মাইল, মাইল সংগ্রামে চেতনা বপন করেছে। আমাদের পরাধীনতার, দাসত্বের শেকল ছেঁড়ার গান রচনা করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতা সংগ্রামে মহান নেতার আত্মত্যাগ আর সমাজতান্ত্রিক চেতনার মর্ম বাণীর পাদপিঠ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যাদুঘর। যার ধারায় আমরা আজ নতুন প্রজন্ম একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় হেঁটে যাচ্ছি।
ফরিদপুরে দুঃসময়ে লড়াই, সংগ্রামে যারা আওয়ামী লীগের যোদ্ধা হয়ে মানুষের পাশে থেকেছেন কল্যাণে, উন্নয়নে বিগত দুঃসময়গুলো পাড় করেছেন তারা এই জেলারই সন্তান। রাজপথ আর মিছিল সংগ্রামের অধ্যায়ে সে ইতিহাস মুঁছে ফেলার নয়। ফরিদপুরের ইতিহাসে সেইসব বীর সাহসী যোদ্ধারা অনেকেই প্রয়াত হয়েছেন। তাদের বিদেহী আত্মার প্রতি একজন ক্ষুদ্রতম চেতনার কর্মী হিসেবে সশ্রদ্ধ সালাম ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি। আর যারা এখনও বেঁচে আছেন অনেক ক্ষত আর ব্যথা, অপমান লাঞ্চনার প্রহরগুলো ইট চাপা দিয়ে রেখেছেন অভিমানের ঘোমটায়। তাদের প্রতিও আমার শ্রদ্ধা রইল। এ জেলার রাজপথে সেইসব আলোকিত মানুষের স্পর্শে আশার সুযোগ হয়েছিল কিশোর বয়সেই। নির্মম সময় আর অর্থনৈতিক বৈষম্যের চাবুকে পৃষ্ঠ স্বপ্নভাঙা জীবনে ইচ্ছের সমস্তটা পূর্ণতা দিতে পারিনি। তারপরও চেতনার মাঠ থেকে সরে যায়নি। হালুয়া-রুটির গন্ধে আসক্ত হইনি। খ্যাত-অখ্যাত অধ্যায়ে ছুটিনি। একজন সংবাদ কর্মী, চিত্র শিল্পী, কবি আর মানবতার কর্মী হিসেবে সমস্ত ব্যথাগুলোকে চেঁপে রেখেছি। আর দেখেছি নির্মম ইতিহাস। স্বাধীনতা বিরোধী বংশের হাতে লাঞ্ছিত হবার কষ্ট বহন করে এ জেলায় অনেকে নিরবে-নিভৃতে কেঁদেছেন। একটি বিশেষ বাহিনীর আতঙ্কে নির্যাতিত, শোষিত, ক্ষতিগ্রস্থরা কথা বলার সাহস পায়নি এখানে। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে আমিও সাহস করিনি, এটা আমারও ব্যর্থতা। অনেক কথা বললাম, আরেকদিন বলব, ঈশ্বর সুযোগ দিলে ফরিদপুরের অনেক নাজানা ইতিহাস লিখবো। আজ মুল কথায় আসি। একটি বিশেষ বাহিনীর পতন হয়েছে। মানুষের মন থেকে ভয় সরতে শুরু করেছে। আর এই ভয় তাড়াবার যুদ্ধে যারা নেমেছেন ফরিদপুরবাসীর পক্ষ থেকে তাদেরকে সশস্ত্র সালাম। এবার যে কথা বলতে চাই, ফরিদপুর গণমানুষের মধ্যে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করা মানুষেরা এই মুহুর্তে ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুঃসময়ের যোদ্ধাদের আশার প্রত্যশায় রয়েছে। তারা যদি এ জেলায় সত্যি সত্যি সকল অভিমান সড়িয়ে আবারও আসেন তাদের সাদরে গ্রহণ করবে মানুষ। ফরিদপুর জেলার আওয়ামী লীগ ইতিহাসের দুঃসাহসিক যোদ্ধাদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ভাঙ্গা-৪ আসনের সাবেক সাংসদ এ্যাডঃ সামসুদ্দিন মোল্যা, সদরপুরের এ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন, ফরিদপুর সদরের ইমামউদ্দিন আহমাদ, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস.এম. নুরুন্নবী, হাসিবুল হাসান লাবলুসহ অনেকে। আর বেঁচে আছেন এখনো সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ সামসুল হক ভোলা মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মাসুদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাবু বিপুল ঘোষ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন, ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক শামীম হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুর রহমান খান, বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদুর রহমান জাহিদ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শ্যামল কুমার ব্যানার্জী। যারা রাজপথে এলে আবারও ফরিদপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রাণ ফিরে পেতে পারে। উল্লেখিত ব্যক্তিদের প্রত্যেকেরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে মানুষের মাঝে। এছাড়াও দুঃসময়ের আওয়ামী লীগের যোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত ডিক্রিরচরে সামসু মোল্যা, মুক্তিযোদ্ধা হায়দার হোসেনসহ অনেকে। এছাড়াও টানা ২৮ বছর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা সমীর বোসসহ অনেকে। এর পরবর্তী ধারায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের আদর্শেই পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বোস, সাবেক কোতয়ালী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম চৌধুরী, কোতয়ালী থানা কমিটির সাবেক সভাপতি খলিফা কামাল উদ্দিন, ডিক্রিরচরের হাবিবুর রহমান ফকির, ফজলুর রহমান ফজলসহ শতাধিক আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। গত ১৫ বছর অনেকে ব্যথা, অপমান সইতে না পেরে রাজনীতি থেকে সড়ে গেছেন। আবার কেউ কেউ প্রবাসে গিয়ে নিজেকে ঢেকে রেখেছেন। আবার কেউ ঢাকায় কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ সবকিছু গায়ে সয়ে এখানেই মাঠে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের সাহস, আর অর্থ দিয়ে ঢাকায় বসে দলকে চালিয়েছেন সাবেক ইউরো বাংলা ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বর্তমান ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম হক ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পদক শ্যামল ব্যানার্জী। ফরিদপুর থেকে ঢাকায় যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আস্থার কেন্দ্র ছিল বাংলা মটরস্থ কনকর্ড টাওয়ারের ইউ,রো বাংলা। এছাড়াও ফরিদপুরে নেতাকর্মীদের বিপদ-আপদ নানা দুর্যোগ মোকাবেলায় উল্লেখিত ব্যক্তি দু’জনের অবদান শোধ হবার নয়। বেশ কিছু নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় লাভের পেছনে অসংখ্য নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এই ব্যক্তি দুজনের অবদান মর্মে মর্মে গাঁথা। ইতিহাস থাকুক ইতিহাসের ধারায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-কে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে দলকে পুনঃগঠনে জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা অবশ্যই শুভ দৃষ্টি দেবেন। যিনি সমস্ত দুর্যোগ কাটিয়ে বাংলাদেশেকে অবিরাম এগিয়ে নিচ্ছেন। (পর্ব-১)
লেখক, সংবাদকর্মী, কবি, মানবাধিকারকর্মী।
বি:দ্র: ফরিদপুর আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে যোদ্ধা ধারাবাহিকভাবে লিখবো। কারো কাছে কোন তথ্য, ছবি, ইতিবৃত্ত থাকলে দিয়ে সাহায্য করুন। অথবা মেইলে পাঠান: নরলড়ুভঢ়ঁৎ@মসধরষ.পড়স
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন