করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড বিশ্ব ক্রীড়াসূচি। সব ফুটবল লিগ বন্ধ। আর্থিক সংকটে পড়েছে ক্লাবগুলো। অনেকেই ফুটবলার ও সাপোর্ট স্টাফের বেতন কাটার পথে হাঁটছেন। কবে ফের খেলা মাঠে গড়াবে-নিশ্চিত করে তা বলা যাচ্ছে না।
এ সংকটময় পরিস্থিতিতে নিঃসন্দেহে দলবদলের বাজারে বিশাল প্রভাব পড়বে। কিছু দিন পরই শুরু হওয়ার কথা এ মৌসুম। তাতে ক্লাবগুলোর আয়, ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি, নতুন খেলোয়াড় নিয়োগ-সব কিছুর ওপর প্রভাব ফেলবে করোনা মহামারী।
আগামী ১০ জুন পর্দা ওঠার কথা দলবদলের মৌসুমের। ইতিমধ্যে নজরে থাকা ফুটবলারদের তালিকা তৈরি করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো। তাদের এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছেন তারা। তবে কবে নাগাদ প্রতিযোগিতা শুরু হতে পারে, তা মাথায় রাখতে হচ্ছে তাদের। এখানেই দোটানায় ভুগছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কারণ সময় বিবেচনায় ফুটবলার কেনাবেচা করতে হবে।
করোনায় ইংল্যান্ডে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এমতাবস্থায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যেও দেশটিতে টুর্নামেন্ট শুরু করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তবে অনেক ক্লাব চাইছে, পরিস্থিতির উন্নতি হলে অন্তত দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা শুরু করা হোক। অন্তত টিভির দর্শকদের জন্য হলেও সেই পদক্ষেপ নেয়া হোক। তাতে ফুটবলকে স্বাভাবিক রূপে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কিন্তু দলবদলের বাজারের কী হবে? ফুটবল বোদ্ধারা বলছেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত খেলোয়াড় বেচাকেনার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হোক। অনেকটা ২০০৩-এর আগের সময়ের মতো। তখন বছরজুড়ে দলবদল হতো। তবে ঝামেলার কারণে পরে দলবদলের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয় আন্তর্জাতিক ফুবটল ফেডারেশন (ফিফা)।
সর্বকালের সেরা ফুটবলার যারা (ট্রান্সফার ফি’র হিসাবে)
ক্স নেইমার-বার্সেলোনা থেকে পিএসজি- ২০১৭ (প্রায় ১৮৭৫ কোটি রুপি)
ক্স কিলিয়ান এমবাপ্পে-মোনাকো থেকে পিএসজি- ২০১৮ (প্রায় ১৫১৫ কোটি রুপি)
ক্স ফিলিপে কুতিনহো-লিভারপুল থেকে বার্সেলোনা-২০১৮ (প্রায় ৯৯৩ কোটি রুপি)
ক্স ওসমানে ডেম্বেলে-ডর্টমুন্ড থেকে বার্সেলোনা-২০১৭ (প্রায় ৯১৬ কোটি রুপি)
ক্স পল পগবা-জুভেন্টাস থেকে ম্যানইউ-২০১৬ (৮৪৫ কোটি রুপি)
ক্স ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো-রিয়াল মাদ্রিদ থেকে জুভেন্টাস-২০১৮ (প্রায় ৮৩২ কোটি রুপি)
এরই মধ্যে সম্ভাব্য ফুটবলারদের সই করানোর পরিকল্পনা করে রেখেছে ইপিএলের ক্লাবগুললো। তবে করোনার প্রকোপে তাতে পরিবর্তন আসতে পারে। কারণ প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন তারা। ক্লাবগুলোর আয়ের অনেকটা আসে টিভি স্বত্ব থেকে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে চলতি মৌসুম শেষ না হলে ৭৬২ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড কেটে নিতে পারে টিভি সংস্থাগুলো। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭২১৮ কোটি রুপি।
স্পষ্টত ক্লাবগুলোর দলবদলের মৌসুমে ফুটবলারদের সই করানোর ক্ষেত্রে বিশাল ধাক্কা দেবে। তখন খেলোয়াড় কেনাবেচা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন তারা। বিকল্প হিসেবে বর্তমান দলে থাকা ফুটবলারদের ধরে রাখতে জোর দেবে অনেক ক্লাবই।
ইতিমধ্যে সমস্যায় পড়েছেন স্কাউটরাও। প্রতিভা তুলে আনতে বড় ভূমিকা রাখেন তারা। ফুটবল বন্ধ থাকায় নতুন কোনো ফুটবলারকে ঠিকমতো পরখ করতে পারছেন না এসব কোচ।
ফুটবলারদের চুক্তি নিয়েও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এরই মধ্যে অভিনব প্রস্তাব দিয়েছে ফিফা। তারা বলছেন– যতদিন করোনার ধ্বংসলীলা শেষ না হয়, ততদিন চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হোক। মৌসুমের শুরুতে নতুন চুক্তিও ফলপ্রসূ হবে। দলবদলের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধও রেখেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
ডেইলি মেইল, স্পোর্টস আড্ডা, আনন্দবাজারের অবলম্বনে
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন